বইয়ের নাম: অলিভার টুইস্ট
লেখক: চার্লস ডিকেন্স
অলিভার টুইস্ট গল্পের মূল চরিত্র অলিভার। অলিভারকে কেন্দ্র করে সমগ্র গল্প গড়ে। গল্পের প্রথমে এক গর্ভবর্তী মহিলা বহুদূর হেঁটে ক্লান্ত হয়ে পড়ে যায়। তখন সে আশ্রয় পায় এক বুড়ির বাড়িতে। বুড়ির বাড়িতে আশ্রয়ের কিছুক্ষণ পরে মহিলাটি বাচ্চা প্রসব করে শেষ বারের মতো বাচ্চাকে এক পলক দেখে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন৷মহিলাটি মারা যাওয়ার আগে বুড়ির কাছে কিছু অলঙ্কার দিয়ে যায় ছেলেকে লালন-পালনের জন্য। ছেলেটির নাম রাখা হয় অলিভার । অলিভার ছোট বেলা থেকে অত্যাচারের শিকার। বুড়ি তাকে তেমন খাবার দিত না। বুড়ি অলিভারের মায়ের দেওয়া অলঙ্কার বিক্রি করে দেয়৷অলিভার কে অনাথ আশ্রমে রাখা হল। অনাথ আশ্রমে অলিভার খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করতে থাকে। অনাথ আশ্রমে খাবার এত কম দিত যে অনেক শিশু না খেয়ে মারা যায়৷ অলিভার একটু বড় হলে তাকে অনাথ আশ্রম থেকে কাজে লাগানো হয়। তখনও তার বয়স দশ বছরের মতো। এ বয়সে তাকে কাজে নিয়োগ দেওয়া হল আর চলতে থাকলো অত্যাচার।খুব কম খাওয়া দেওয়া হত। খাবার এতই কম দেওয়া হত যে শিশুরা খাবার খাওয়ার পর পুরো প্লেট চেটে খেয়ে ফেলতে। এতে করে প্লেট ধোয়ারও প্রয়োজন হত না। তাই একদিন খাবার বেশি দেওয়ার জন্য সব শিশুদের পরিকল্পনা মতো অলিভারকে প্রথম বিদ্রোহ করার দায়িত্ব দেওয়া হল। পরিকল্পনা মত অলিভার খাবার আরও বাড়িয়ে দিতে বললো। অনাথ আশ্রমে এ প্রথম কেউ বিদ্রোহ করলো। কর্তৃপক্ষ এতে চিন্তিত হয়ে পড়ে। অলিভারের মত সবাই যদি বিদ্রোহ করে বসে? কর্তৃপক্ষ মূলত শিশুদের খাবারের টাকা আত্মসাৎ করে থাকে। আর শিশুদেরকে দিয়ে কাজ করায়। তাই অলিভার যখন বিদ্রোহ করে বসলো তখন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিলো অলিভারকে শাস্তি দিবে। তারা অলিভারকে জেলে বন্দি করলো। আর বিজ্ঞাপন দিলো একটি ছেলেকে তারা বিক্রি করবে। যে ছেলেটিকে নিবে তাকে কিছু টাকা দেওয়া হবে।কিন্ত কেউ অলিভারকে নিতে আসলো না৷ অবশেষে এক ভদ্রলোক অলিভারকে কিনে নেয়। সেখানে অলিভারের মালিক কফিনের ব্যবসা করে৷ অলিভার মালিকের দোকানে কাজ করতে করতে তার বিশ্বস্ত হয়ে উঠে।কিন্তু কিছুদিন পরে মালিকের অন্য এক কর্মচারীর সাথে ঝামেলা বাঁধে। সেই কর্মচারী অলিভারের মায়ের নামে খারাপ কথা বললে অলিভার আর সে ব্যক্তির মধ্যে মারামারি লেগে যায়। একসময় অলিভারের মালিক এসে অলিভারকে বেদম পিটায়। পাশাপাশি সে সুযোগে শয়তান কর্মচারীটি ও মালিকের স্ত্রী ও অলিভারকে খুব মারধর করে৷ এতে করে দুঃখে অলিভার গোপনে ঘর থেকে পালিয়ে যায়৷ লন্ডনের এক চোর তাকে থাকতে দেয়৷ অলিভার প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে পারে এরা চোর৷ এমন সময় অলিভারকে ও তারা চুরি বিদ্যা শিখাতে থাকে। একদিন অলিভার চোর গুলোর চুরি দেখতে বাজারে যায়।এক বই ক্রেতার পকেট থেকে টাকা চুরি করতে গেলে ক্রেতা টের পেয়ে যায় এতে চোরগুলো দৌড় দেয় তখন লোকটি চিৎকার করে বলে চোর চোর তখন সে কথা শুনে চোরগুলো একটু দৌড়ে দূরে গিয়ে থেমে যায় যাতে করে কেউ তাদের না ধরে। কিন্তু অলিভার এসব কিছু বুঝে না তাই সে দৌড় দিয়ে আর থামে নি। ফলে সে ধরা খায়। অলিভার আসলে চোর না পরবর্তীতে বই দোকানদার তা স্বীকারোক্তি দেয়। অলিভার তারপর কিছুদিন সেই বই ক্রেতার বাসায় থাকে। বই ক্রেতা তাকে আদর যত্ন করে বাসায় রাখে। বই ক্রেতা একদিন অলিভারকে কিছু টাকা দেয় বই কিনে আনার জন্য। অলিভার বই আনতে যাওয়ার সময় চোরদের হাতে আবার ধরা পড়ে তারা অলিভারকে ধরে নিয়ে যায় আর অলিভারের সাথে থাকা টাকাও নিয়ে যায়। অলিভার কে নতুন জামা পড়া দেখে চোরগুলো তাকে ব্যঙ্গ করে সালাম দিতে লাগলো। অলিভারকে তারা আবার চুরির কাজে লাগালো। নতুন এক জায়গায় চুরি করার নতুন একটি প্ল্যান তারা করলো। অলিভারকে তারা জোর করে চুরি করতে নিয়ে গেল। কিন্তু এবারের চুরিতে ও ঘরের কর্তারা টের পেয়ে যায়। তারা চোরদের উপর গুলি চালায় অলিভারের পায়ে গুলি লাগে তখন চোরগুলো কিছুদূর অলিভারকে নিয়ে দৌড়িয়ে তাকে রেখেই চলে যায়। বাড়ির কর্তারা কাউকে খুঁজে না পেয়ে বাসায় চলে আসে। তারা একে অপরের সাথে গত রাতের চুরির ব্যাপারটি নিয়ে কথা বলতে থাকে। এমন সময় অলিভার কোনমতে বাড়ির সামনে এসে দরজায় ধাক্কা দেয়। বাড়ির কর্তারা দরজা খুলে ছোট ছেলেটা যাকে গতকাল গুলি করা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা বুঝতে পারে চোরটি আসলে অলিভার না। ধীরে ধীরে গল্পের সবকিছু উন্মোচন হতে থাকে অলিভারের সৎ ভাই মূলত তার পিছনে চোরদের লেলিয়ে দেয়। অলিভারের সব সম্পত্তি গ্রাস করে। পরবর্তীতে অলিভার তার সব হারানো সম্পত্তি ফিরে পায়৷ অন্যদিকে চোরদের প্রধান সাইকস উগ্র মস্তিষ্কতার কারণে নিজ ভালোবাসার মানুষকে ভয়ংকর ভাবে হত্যা তার সাজাও সে পায় জনগণের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে সে ছাদ থেকে নামতে গিয়ে বগলের দড়ি ভুলে গলায় পেঁচিয়ে মাটি থেকে ৩৫ ফুট উপরে তার প্রাণহীন দেহ ঝুলে থাকে। আর সাইকসকে বাঁচাতে গিয়ে কুকুর লাফ দেয় তখন কুকুরটি নিচে পড়ে পাথরের সাথে ধাক্কা লেগে মাথার গিলু বের হয়ে যায়। সবাই সবার পাপের শাস্তি পায়।
VLOG:
#বইয়ের নাম: অলিভার টুইস্ট লেখক: চার্লস ডিকেন্স,অলিভার টুইস্ট (২০০৫) – হতভাগ্য পথশিশুর জরাজীর্ণ শৈশব - ইতিবৃত্ত,ডিকেন্স '' অলিভার টুইস্ট '': সারাংশ