বই আলোচনা




গল্পের সারসংক্ষেপ:

বইয়ের নাম: ডেভিড কপারফিল্ড

লেখক চার্লস ডিকেন্সের লেখা বই ডেভিড কপারফিলল্ড। এই উপন্যাসের মূল চরিত্র ডেভিড। যে হচ্ছে একটি স্কুলের ছাত্র। ডেভিডের বাবা নেই তাই তার মায়ের সাথে মার্ডস্টোন নামে এক ব্যাক্তির সখ্যতা গড়ে উঠতে থাকে৷ তবে এ লোকটির চলাফেরা ডেভিডের ভালো লাগে না। আর ডেভিডের মনে হয় লোকটা ভালো না। কিন্তু পরবর্তীতে মার্ডস্টোন ডেভিডের মাকে বিয়ে করেন৷ তারপর শুরু হয় ডেভিডের উপর অত্যাচার।

ডেভিড এতদিন মায়ের কাছে পড়াশুনা করতো কিন্তু মায়ের বিয়ের পর মার্ডস্টোন জোর করে ডেভিডকে পড়ায় আর মারধর করে অনেক। এর মধ্যে মার্ডস্টোনের বোন ও এসে যোগ দেয় বাড়িতে। মার্ডস্টোন আর তার বোনের অত্যাচারে ডেভিড অতিষ্ঠ হয়ে যায়। একদিন মার্ডস্টোন ডেভিডকে পড়ানোর সময় প্রচুর মারধর করে তখন ডেভিড মার্ডস্টোনকে কামড়িয়ে দেয় এতে মার্ডস্টোন ডেভিডকে আরও বেশি মারধর করে। শান্তিপূর্ণ বাড়িটি প্রহারের কারণে বিশৃঙ্খলায় পরিণত হয়। ডেভিডকে যখন তার মা আদর করতে আসে তখন স বাবা মার্ডস্টোন মাকে সরিয়ে দেয়। 

মার্ডস্টোন বলে এত আদর করে ছেলেকে তুমি মাথায় তুলেছো। পরিবারে মাকে সবসময় মার্ডস্টোন ও তার বোন মিলে চুপ করিয়ে রাখে। কিছুদিন পর ডেভিডকে বোর্ডিং স্কুলে পাঠানো হয়। সেখানের হেডমাস্টার মিস্টার ক্রিকল খুবই রাগী মেজাজের ছিলেন। আর সে স্কুলের ক্লাসমেরাও তেমন বন্ধুভাবাপন্ন না ।এতে ডেভিডের বোর্ডিং স্কুলটি ভালো লাগতো না।স্কুলে ছুটির দিন শুরু হলে ডেভিডের বাড়ি আসতে তেমন আগ্রহ থাকে না। বাড়ি আসার পর সে দিন মার্ডস্টোন আর তার বোন নাকি দূরে কোথায় গিয়েছে সে জানতে পারে এতে সেদিন খুব আনন্দে যায় ডেভিডের। ডেভিডের মা তাকে অনেক আদর করে। কিন্ত আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না ।কিছু সময় পরে মার্ডস্টোন ও তার বোন চলে আসে৷ মার্ডস্টোনের বোন ক্যালেন্ডারে দিন হিসাব করতে থাকে কবে ডেভিড এ বাড়ি থেকে বের হবে।

ডেভিড ১ মাস পর বোর্ডিং স্কুলে ফিরে যায়। ক্লাস করতে থাকে কিছুদিন পর সে শুনতে পায় তার মায়ের অবস্থা গুরুতর। ডেভিড খুব দ্রুত ছুটে যেয়ে দেখে তার মা বেঁচে নেই সাথে ডেভিডের ভাই ও আর নেই।

ডেভিডকে মার্ডস্টোন বলে তোমার মতো দুষ্ট ছেলের পড়াশুনার দরকার নেই সে ডেভিডকে জোর করে কারখানার কাজে লাগিয়ে দেয়। ডেভিড কাজ করতে থাকে।কোন সময় এক বেলা খাবার পায়। খেয়ে না খেয়ে খুব কম টাকায় তাকে চলতে হয়। ডেভিড কিছুদিন কাজ করার পর বুঝতে পারে তার এখানে থাকা সম্ভব না তাই সে চিন্তা করে বের করে তার এক দাদী আছে। সে খোঁজখবর করে দাদীর ঠিকানা বের করে তার কাছে চলে যায়। দাদী তাকে আদর যত্নে বড় করে৷ ডেভিড দাদীকে সব কথা খুলে বললে দাদী মার্ডস্টোন ও তার বোনকে ডাক দেয়৷ মার্ডস্টোন ডেভিডকে খুব খারাপ ছেলে হিসেবে দাদীর সামনে উপস্থাপন করে৷

মার্ডস্টোন বলে ডেভিডকে কাজে পাঠিয়েছি ও তা ছেড়ে আপনার কাছে চলে এসেছে। সে পড়াশুনা করে না।স্কুলে কেউ তাকে পছন্দ করে না। সে ডেভিডের দাদীমাকে বলে আপনি আমার হাতে ওকে ছেড়ে দিন। 

দাদীমা কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে ছিলো তারপর তিনি ডেভিডকে ডাকে এবং বলে তুমি কি তাদের সাথে থাকবে। ডেভিড বলে না। তখন দাদীমা তাদের বলে এক্ষণি আমার বাসা থেকে বের হয়ে যাও। মার্ডস্টোন ও তার বোন থ হয়ে যায়। তারপর তারা চলে যায়। ডেভিডকে দাদী ভালো স্কুলে ভর্তি করলো। সেখানে পড়াশুনার কাজে তাকে সাহায্য করে উইকফিল্ড।উইকফিল্ড হলেন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। যিনি হিম নামে একজন ব্যক্তিকে দয়া করে থাকতে দিয়েছেন এবং আইন বিদ্যায় পড়াশুনা করিয়েছেন।আর উইকফিল্ডের মেয়ের নাম অ্যানিস।

হিম অনেক ভদ্রতা দেখালেও মালিক উইকফিল্ডের সম্পত্তি গ্রাস করার বদ মতলব তার আছে। এদিকে প্রাথমিক পড়াশুনা শেষ হওয়ার পর ডেভিডকে দাদীমা ল পড়ার জন্য ব্যবস্থা করেন। এমন অবস্থায় ডেভিড জানতে পারে হিম ধীরে ধীরে উইকফিল্ডের সবকিছু দখল করছে এবং অ্যানিস কে বিয়ে করার খারাপ উদ্দেশ্য আছে তার। কিন্তু হিম শেষ পর্যন্ত জেলে বন্দি হয়।এদিকে দাদী ব্যবসায় টাকা ইনভেস্ট করে প্রায় দেউলিয়া হয়ে যায় এ সময় ডেভিড উকালতির ছোটখাট চাকুরী পায় যা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিলো ।

অন্যদিকে ডোরা নামে এক মেয়েকে ডেভিড ভালোবেসে ফেলে। ডোরাও বলতে চায় আমি তোমার। শেষ পর্যন্ত তাদের বিয়ে হয়। ডোরা বিয়ের কিছুদিন পর মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে ডোরা অ্যানিসকে বলে ডেভিডকে দেখে রাখতে। ডেভিড ডোরাকে হারিয়ে অসহায় হয়ে যায়।অ্যানীস এসে ডেভিডকে আকড়ে ধরে। ডেভিড যেন অ্যানীস এর মাঝেই ডোরা কে খুঁজে পায়। ডেভিডের মনে হয় ডোরা মরে নি।

Post a Comment

Previous Post Next Post

About Me